Header Ads

Header ADS

পুতিন: ইউক্রেনে আমাকে আরও আগেই আক্রমণ করা উচিত ছিল।

 পুতিন: ইউক্রেনে আমাকে আরও আগেই আক্রমণ করা উচিত ছিল।


                                         রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: রয়টার্স |

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মন্তব্য করেছেন, ইউক্রেনে আরও আগে পূর্ণাঙ্গ হামলা চালানো উচিত ছিল এবং যুদ্ধের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার ছিল।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বছরের শেষ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন এই কথা বলেন। তিনি জানান, ২০২২ সালের হামলার আগে "পদ্ধতিগত প্রস্তুতি" নেওয়া প্রয়োজন ছিল, এবং এটিকে তিনি "বিশেষ সামরিক অভিযান" হিসেবে উল্লেখ করেন।

রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল করে নেয় এবং পূর্ব ইউক্রেনে সংঘাত শুরু করে, তবে আট বছর পর কিয়েভ দখলের চেষ্টা চালায়।

চার ঘণ্টার এই সংবাদ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত নেতা, রাশিয়ার পরমাণু নীতির আগ্রাসী অবস্থান এবং অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

"ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বছরের ফলাফল" শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনটি রাশিয়ার প্রধান টিভি চ্যানেলগুলোতে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়, যেখানে পুতিনের পেছনে রাশিয়ার মানচিত্র ছিল, যার মধ্যে ইউক্রেনের সংযুক্ত অঞ্চলগুলোও দেখা যায়।

এতে জনগণ, বিদেশি সাংবাদিক ও অবসরপ্রাপ্তরা পুতিনের কাছে প্রশ্ন করেন, তবে এটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত এবং নিয়ন্ত্রিত আয়োজন।

রাশিয়া এখন তার পূর্বসূরি বরিস ইয়েলৎসিনের সময়ের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, রাশিয়া তার "সার্বভৌমত্ব" ফিরে পেয়েছে।

সিরিয়ার আসাদ সরকারের পতন নিয়ে পুতিন বলেন, এটি ক্রেমলিনের পরাজয় নয়, তবে পরিস্থিতি "জটিল" বলে তিনি স্বীকার করেন। পুতিন জানান, ক্ষমতাচ্যুত আসাদ এখনও তার সঙ্গে কথা বলেননি, তবে শিগগিরই তিনি এই বিষয়ে আলোচনা করবেন।

পুতিন আরও বলেন, রাশিয়া সিরিয়ার নতুন শাসকদের সঙ্গে দুটি সামরিক ঘাঁটি রাখার বিষয়ে আলোচনা করছে, যা ভূমধ্যসাগরের উপকূলে অবস্থিত এবং রাশিয়া সেগুলো মানবিক কাজে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি চার বছর ধরে কথা বলেননি, তবে ট্রাম্প যদি চান, তিনি তার সঙ্গে দেখা করতে প্রস্তুত।

চীনের বিষয়ে পুতিন জানান, রাশিয়া ও চীনের সম্পর্ক বর্তমানে সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং তারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একযোগে কাজ করছে। তিনি বলেন, "গত দশকে রাশিয়া-চীনের সম্পর্ক এমন উচ্চতায় পৌঁছেছে, যা আমাদের ইতিহাসে আগে কখনো হয়নি।"

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পুতিন বলেন, তিনি "সমঝোতায়" রাজি, তবে এই সমঝোতার বিষয়বস্তু স্পষ্ট নয়। তিনি আরও জানান, রুশ বাহিনী প্রতিদিন ফ্রন্টলাইনে অগ্রগতি করছে এবং তাদের তিনি "নায়ক" হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

পুতিন বলেন, ইউক্রেনের লুহানস্কে রাশিয়া সমর্থিত বাহিনী ২০১৪ সালে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সেখানকার সড়ক ব্যবস্থার মান অনেক উন্নত হয়েছে।

রাশিয়ার নতুন পরমাণু নীতির ব্যাপারে পুতিন বলেন, এটি পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে পৌঁছেছে কি না, তা তাদেরই জিজ্ঞেস করতে হবে। নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, যদি কোনো দেশ রাশিয়ার ওপর বড় আক্রমণ চালায় এবং তা পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের সমর্থন পায়, তবে রাশিয়া পারমাণবিক হামলা চালাতে পারে। ইউক্রেন যদি বড় কোনো ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন আক্রমণ চালায়, তাও এই নীতির আওতায় পড়বে।

পুতিন নতুন ব্যালিস্টিক মিসাইল "ওরেশনিক"-এর সক্ষমতা নিয়েও কথা বলেন, যা নভেম্বরে ইউক্রেনে হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, এর শক্তি পরীক্ষা করতে এটি ইউক্রেনের দিকে ছোড়া উচিত, আর ইউক্রেনের মার্কিন সাহায্যপ্রাপ্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এটি থামানোর চেষ্টা করুক।

"রাশিয়ার সার্বভৌমত্ব" নিয়ে পুতিন মন্তব্য করেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের ওপর নির্ভরশীলতা কমেছে, যা তিনি ইউক্রেন আক্রমণের একটি বড় অর্জন হিসেবে দেখছেন।

No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.